২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবি

ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবি -

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নেতারা জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে ল্যাপটপের মূল্য ৩১.২৫ শতাংশ এবং প্রিন্টার, টোনার ও কার্টিজে ১৫ শতাংশ ও ইন্টারনেটের মূল্য ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে।
প্রযুক্তি সংগঠনগুলোর নেতারা প্রযুক্তি পণ্য এবং ইন্টারনেটের দাম বেড়ে গেলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেকাংশে থমকে যাবে বলে মন্তব্য করেন। এজন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ল্যাপটপ, প্রিন্টার, টোনার ও কার্টিজ এবং ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত শুল্ক ও কর প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
সম্প্রতি রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিসিএস সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস, বেসিস, আইএসপিএবি, বাক্যে এবং ই-ক্যাব সভাপতিরা এসব আহ্বান জানান। সুব্রত সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’বাস্তবায়নের যে পথে আমরা হাঁটছি, ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং ইন্টারনেটের ওপর কর ও শুল্ক আরোপ করা হলে তা বাস্তবায়ন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে ল্যাপটপ আমদানিতে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সহ-সভাপতি আবু দাউদ খান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রত্যাশিতভাবে ইন্টারনেট, ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের ওপর ভ্যাট ও ট্যাক্স বসানো হয়েছে, যা প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বেসিসের দাবিগুলো বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।
আইএসপিএবি সভাপতি মো. ইমদাদুল হক বলেন, ২০২২-২৩ এর প্রস্তাবিত বাজেটে ব্রডব্যান্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম কর আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে আরো ১০ শতাংশ। এতে ইন্টারনেট সংযোগের খরচ বেড়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাক্যে সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের উপর প্রস্তাবিত কর ও শুল্ক বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতকেও প্রভাবিত করবে। ভ্যাট আরোপ হওয়ার ফলে খরচ বৃদ্ধি পাবে।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, আমাদের উদ্যোক্তাদের সেবা প্রদানের জন্য ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মূল্যবৃদ্ধি করা হলে তাদের ব্যয় বেড়ে যাবে। বর্তমানে দেশে ই-কমার্স খাত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে যদি ল্যাপটপ, কম্পিউটারের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ইন্টারনেটের ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয় তবে উদ্যোক্তারা তাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না।
সংবাদ সম্মলনে সুব্রত সরকার জানান, দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারের যেকোনো পদক্ষেপকে বিসিএস স্বাগত জানায়। কিন্তু যে প্রযুক্তিপণ্যের উপর আমরা মূল্য সংযোজন কর আরোপ করতে যাচ্ছি, সেই পণ্যকে উৎপাদন করে দেশের ল্যাপটপ চাহিদা পূরণ করা যাবে কিনা, সে বিষয়েও আমাদের স্বচ্ছ ধারণা থাকা প্রয়োজন। সারা পৃথিবীতে পাঁচ থেকে ছয়টি প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ল্যাপটপ এবং প্রিন্টার উৎপন্ন করে। এছাড়া বাংলাদেশে কোনো প্রিন্টার উৎপাদন কেন্দ্র এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশে ল্যাপটপ উৎপাদনের প্রযুক্তি কারখানাও এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। মাত্র ১/২টি কোম্পানি স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। কেবলমাত্র বাইরে থেকে আনা কম্পোনেন্টস এখানে সংযোজন হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহ দিতে আমদানিতে বাড়তি ট্যাক্স বসালে তা আসলে স্থানীয় উৎপাদনের সহায়তার চাইতে ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে। আর এজন্যই ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনায় ল্যাপটপ, প্রিন্টারের উপর ১৫% এবং ইন্টারনেটের উপর ১০% মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার একান্ত জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল